সবসময় সিনেমা বানাতে গেলে যে ডিজাইনার জামাকাপড়, দামি চোখ টাটানো বিশাল গাড়ি রাজকীয় ধনি পরিবারের যে দরকার তা অন্তত এবার ভাল করে বুঝিয়ে দিয়েছেন কাপুর অ্যান্ড সনস ছবির প্রযোজক করন জোহর। মাঝে মাঝে সাধারণ মানুষ, গ্লিসারিনের কম প্রয়োগ এবং সবচেয়ে জরুরী মেলোড্রামায় ঘাটতিই মন ছুঁয়ে যাওয়ার রহস্য হতে পারে। পরিচালক শকুন বাতরার মাল্টিস্টারার এই কাপুর অ্যান্ড সনস ছবির গল্প দুই ভাই ও তাদের পরিবারকে ঘিরে। তামিলনাড়ুর একটি পাহাড়ি এলাকা কুনুরেদুই ভাই অসুস্থ ঠাকুরদাকে দেখতে আসে পরিবার সমেত দেখতে আসা দুই ভাইয়ের জীবনের চড়াই উতরাই দর্শককে নিজেদের আবেগের সঙ্গে ভাসিয়ে নিয়ে যাবে। View Photos তবে এই ছবির হৃতপিণ্ড দুই ভাইয়ের সম্পর্কের টানাপোড়েনই। তাদের বিরুদ্ধাচরণ, তাদের সখ্য, দুই ভাইয়ের মনের গভীরে জন্মানো হিংসা খুব স্বাভাবিক ভাবেই বেরিয়ে এসেছে ছবিতে। তার কৃতিত্ব অবশ্যই পরিচালকের প্রাপ্য। আর এই ছবির চরিত্র থেকে আলোকসজ্জা, কস্টিউম থেকে মেকআপ, মেলোড্রামা এবং আবেগের অতিনাটকীয়তা না করার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ। ভারতীয় পরিবারে সন্তান ও বাবা-মা উভয়ের মধ্যেই মিস্টার পারফেক্ট সন্তানের যে ক্লিশে মনোভাব বা বলা ভাল চাপ রয়েছে তা এই ছবিতে অত্যন্ত ভালভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। সবশেষে বলা ভাল কাপুর অ্যান্ড সনস কোনও একজনের পারফরম্যান্স বা প্রাধান্যের ছবি নয়, এ ছবি পুরো কাপুর পরিবারের। কিছু দুরন্ত পারফরম্যান্স, আবেগঘন মুহুর্ত অবশ্যই এছবির সম্পদ। আর ছবির দুই হ্যান্ডসম হাঙ্ক ছবিকে আরও আকর্ষণীয় বানিয়েছে। এই ছবিতে ফওয়াদ খান রাহুলের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। রাহুল একজন সফল লেখক। কাপুর পরিবারের বড় নাতি. যে সবসময় পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে। সে নরম মনের, আন্তরিক ও ভালবাসতে জানে। কয়েকটি দৃশ্য রয়েছে যেখানে তার সমালোচনাযোগ্য বিষয়গুলিও তুলে ধরা হয়েছে। আর সেইসব দৃশ্যে ঝকঝকে ফাওয়াদ। বলিউডের একবার হলেও সেই স্টিরিওটাইপ অভিনয়ের হাত থেকে মুক্তি পেয়েছে। অত্যন্ত সুচারুভাবেই অর্জুনকে পর্দায় ফুটিয়ে তুলে দর্শকদের মনের ভিতরে ঢুকিয়ে দিয়েছেন ফওয়াদ। অন্যদিকে ঠিক বিপরীত ছোট ভাই অর্জুন। যে সফল নয়। প্রতিযোগীর দৌড়ে পিছনের সারিতে থাকা এক মধ্যমানের সাধারণ ছেলে। এই ছরিত্রটিতে অভিনয় করেছেন সিদ্ধার্থ মলহোত্রা। মন্দ নয়, তবে ছবিতে অন্যান্য অভিনেতা-অভিনেত্রীদের তুলনায় কোথাও কোথাও কিছুটা কাঁচা লেগেছে সিদ্ধার্থকে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যথেষ্ট গ্রুম হয়েছেন, তবে ঘষা-মাজা এখনও দরকার তার অভিনয়ে। অর্জুন ও রাহুলের বাবা মায়ের চরিত্রে রজত কাপুর এবং রত্না পাঠত শাহের চেয়ে হয়তো ভাল কাস্টিং করতে পারতেন না ছবির নির্মাতারা। কোনও খুঁত নেই অভিনয়ে। 'আশি' বছরের ঋষি কাপুর আরও একবার বুঝিয়ে দিলেন তিনি ফুরিয়ে যাননি। দ্বিতীয় ইনিংস লম্বা টানতেই এসেছেন তিনি। আলাদা করে আলিয়ার কথা বলা দরকার। হাইওয়ে ছবিতে নিজের অভিনয় দক্ষতার প্রমাণ দিয়েছেন আলিয়া। এই ছবিতে সেভাবে টিয়ার চরিত্রে নিজেকে প্রমাণ করার জায়গা পাননি তিনি। তবে তাঁর স্বতঃস্ফূর্ত অভিনয়ে অবশ্যই প্রশংসার যোগ্য। কোথাও মনে হয়নি অভিনয় করছেন আলিয়া। অত্যন্ত জীবন্ত ও বিশ্বাসযোগ্য আলিয়ার অভিনয়। রাহুল-অর্জুন ও তাদের পরিবারের খুঁতগুলোই ছবিকে জীবন্ত ও বিশ্বাসযোগ্য করে তুলেছেন।
আমার এক জীবনে আমি বহু ছায়াছবি দেখে ফেলেছি, বলাটা খুবই ভুল । শুধু আমার জন্য না । একজন নব্বই বছরের বুড়োও যদি একথা বলে, তাহলেও ভুল । খুবই ভুল । পরিসংখ্যান বলে, পৃথিবীতে প্রতি বছর ৫০,০০০ ছবি মুক্তি পায় । প্রতিটি ছবি গড়পড়তায় ৯০ মিনিট করে ধরলেও সব ছবি দেখে শেষ করতে আমার বৎসরে ৩০০০ দিন লাগবে । বছর নিশ্চয়ই ৩৬৫ দিনের বেশি হয় না । সহজ ভাষায়, পৃথিবীর অনেক দারূন ছবি না দেখেই আপনাকে-আমাকে এই পৃথিবী থেকে বিদায় নিতে হবে !
সময় নেই । হাতে একদমই সময় নেই । তাই ভাবলাম, শেয়ার করি । যে ছায়াবন্দী ছবিগুলো দেখে দু-চারদিনেও তার রেশমুক্ত হতে পারি নি, সেসব ছবির নামগুলো ব্লগে লিখে ফেলি । ব্লগে সিনেমাখোর যারা আছেন তারা সবাই কম সময়ে ভাল ছবির সাজেশন পাক । এই পোস্টের উদ্দেশ্য যে একেবারেই সাধু- তাও নয় । আমি পোস্ট করার পেছনে আরও একটা বিরাট বড় কারন আছে । আমি এক্সপেক্ট করছি কমেন্টে হয়তো এরকম আরও অনেক অনেক মুভির নাম পাবো যা দেখে অনেকে কেঁদেছেন, ভয় পেয়েছেন, হেসেছেন ! অথচ সাজেশনের অভাবে আমি হয়তো ঐ কান্নাটুকু কাঁদতে পারি নি- হাসতে পারি নি- মিস করেছি জীবনের অসাধারন কিছু অনুভূতি
Newsletter
Subscribe
Subscribe To Our Email Newsletter & Receive Updates Free